শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের কালুঘাট বেতার কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণার পরের দিন কক্সবাজারে পৌঁছে ছিল এই বার্তা। আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান কায়সান টেলিফোনে এ বার্তা জানিয়েছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট জহিরুল ইসলামকে। তারপর থেকে কক্সবাজারে মাইক যোগে এ বার্তা প্রচার, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি, স্বাধীনতা বিরোধীদের অপতৎপরতা, সুভাষ, ফরহাদ সহ একে একে মুক্তিগামি মানুষকে হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়িত মানুষের র্বামায় শরণার্থী হিসেবে পালিয়ে যাওয়া, মুক্তিযোদ্ধার প্রতিরোধ সর্বশেষ শক্রমুক্ত কক্সবাজার।
মুক্তিযোদ্ধের এসব খন্ড চিত্র পুরোটাই উঠে এসেছে ‘কক্সবাজার গণহত্যা ১৯৭১’ নামের পরিবেশ নাটকে। বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার পর পরই কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহি শহীদ দৌলত মাঠে শুরু হয় এ নাটক। মাঠের অর্ধেক অংশ, শহীদ সুভাষ হলের ব্যালকনি জুড়ে ছিল নাট্য এলাকা। টানা ২ ঘন্টার বেশি নাটকটি উপভোগ করেছেন সর্বশ্রেনীর মানুষ।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে মুজিব শতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশের ৬৪ জেলায় ‘গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার’ শিরোনামে পরিবেশ থিয়েটারের নাটক মঞ্চায়ন হচ্ছে। এর “কক্সবাজার গণহত্যা ১৯৭১” মঞ্চস্থ হয়েছে।
নাটক সঞ্চায়নের উপস্থিত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী জানিয়েছেন, এ বছর বাঙালি জাতির গৌরবের বছর। মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ বর্ষ পালনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ৬৪ জেলায় বধ্যভূমিতে গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার নির্মাণ করছে। তারই অংশ হিসেবে বুধবার কক্সবাজারে নাটকটি মঞ্চস্থ হল। নাটকটির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস উঠে এসেছে পুরোটাই।
কক্সবাজার জেলা কালচারাল অফিসার সুদীপ্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পরিবেশ থিয়েটারের এই নাটকে কক্সবাজারের ১৩০ জন নাট্যকর্মী অংশগ্রহণ করেছে। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন স্বপন ভট্টাচার্য্য।
নাট্য নির্দেশক স্বপন ভট্টাচার্য্য জানান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার’ শীর্ষক কর্মসূচিতে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার নির্মমতাকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য পরিকল্পনা করে। এর জন্য কক্সবাজার জেলায় গণহত্যার পরিবেশ থিয়েটার নির্মাণে কক্সবাজারে গণহত্যার নির্মমতার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক পরিবেশ ও অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। কেননা অন্যান্য জেলার মত কক্সবাজারের মানুষ শরণার্থী হিসেবে তৎকালীন বার্মায় আশ্রয় পেলেও মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করার কোনো প্রকার প্রস্তুতি এবং কিংবা নূন্যতম সহযোগিতা পায়নি। কক্সবাজারে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আলোচিত ঘটনা ছিল শহিদ সুভাষ ও ফরহাদের হত্যাকাÐ। নিমর্ম ও নৃশংস এই ঘটনাটি প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
নাটক মঞ্চায়নের পূর্বে আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয়ের সচিব জসিম উদ্দিন, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা, ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, মুজিবুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মো. নজিবুল ইসলাম প্রমুখ।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply