অধ্যাপক ডা: শুভাগত চৌধুরী

কেনাকাটা করতে যাই, নয়তো খাদ্য প্রস্তুত করি বা আহার—মনোযোগে এসব করা বেশ সুফল আনে।

মনোযোগী আহার বেশ ভালো শরীর আর মনের কুশলের জন্য।

এখন এই ঘরবন্দীকালে অফুরন্ত অবসর। তাই অল্প অল্প করে দেখে, শুঁকে, অনুভব করে আহার করতে দোষ কী? মনোযোগী ধ্যানের চর্চা হলো। আর করোনার এই গ্রহণ তো ছাড়বে, একসময় কৃষ্ণমেঘমুক্ত হবে আকাশ আর তখন এই আহার হবে মনের সঙ্গী। অবশ্য শরীর মনের কুশলের সহায়। আমরা কী খাই, কীভাবে খাই—এসব কিন্তু খাবারের পুষ্টি উপকরণ থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। মনে করে দেখুন শেষ কবে খুব আহ্লাদ করে, মনোযোগ দিয়ে খেয়েছিলেন? সেই খাবারের অভিজ্ঞতা এত মনে আছে। আমাকে যদি বলেন, আমি আমার দিদিমার হাতে তৈরি ‘মাধুপুরি’, ঘরের প্রাঙ্গণে গজানো শাকপাতা, সবজি আর চালে দিয়ে তৈরি সেই অপূর্ব স্বাদের এক গ্রাস গোল লাদ্দু, উফ্ফ! এখনো মনে আছে।

নিশ্চয়ই আপনাদেরও আছে তেমন অভিজ্ঞতা।

আচ্ছা, থাক সেসব। খোলা মন নিয়ে প্রিয় কোনো খাবার খেয়ে নিন। জানি তো, চকলেট সে রকম প্রিয় খাবার।

কালেভদ্রে খাবেন। প্রশ্রয় দিতে হয়, তা-ও খুব মাঝেমধ্যে ।

এবার আরাম করে বসুন কোনো স্থানে। সেখানে নীরব সব, মন উড়ু উড়ু করবে, মন অন্যদিকে চলে যাবে, এমন স্থান নয়।

হাতে চকলেট।

১. এবার চকলেটকে দেখুন আগ্রহের সঙ্গে, মনে অনুসন্ধিৎসা। এর আকার-আকৃতি, রং সব। খেতে এত তাড়া কেন? কেমন দেখতে? একটি খয়েরি পিণ্ড মনে হচ্ছে না তো?

২. কান পেতে শুনুন। চকলেটের মোড়ক বেশ সুন্দর শব্দ করল খোলার সময়। কেমন? মন খুশ না? একে এরপর তাড়িয়ে তাড়িয়ে খাবার আশা তৈরি হলো তো?

৩. এবার আলতো করে ছুঁয়ে দিন একে। কেমন লাগে? এর সংযুক্তি? ঠান্ডা না গরম? হাতে কেমন লাগে? গলে গেল চকলেটটা, নাকি আঠালো করে দিল আঙুলের ডগা?

৪. এবার এর গন্ধ নিন। লালা রসের আহ্বান শুনছেন? জিবে কেমন-কেমন।

এবার মুখে ঢোকান চকলেট। আর মুখে ধরে রাখুন কয়েক সেকেন্ড। এতে কামড় দেবেন আরও পরে। জিবের ওপর এর স্বাদ কেমন লাগে, এর ছোঁয়া জিবের ওপর?

অপেক্ষা করুন। একে চিবিয়ে খাওয়ার আগ্রহ অনুভব করবেন। চুষবেন, এরপর গিলে ফেলা। তবু খাওয়ার পর কি রয়ে গেল এই অনুভূতি, এই স্বাদ?

আহারের পুরো অভিজ্ঞতা মনে থাক। আহারের অভিজ্ঞতা মনে থাক।

আর মনে রাখুন, খাবার খালি খেলে পুষ্টি হয় না, একে উপভোগ করতে হয়।

( লেখাটি প্রথম আলো থেকে সংগৃহিত )

tawhid

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

34 mins ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

45 mins ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago