নিজস্ব প্রতিবেদক : সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সুফল পাচ্ছেন কক্সবাজারের জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গেলো বছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ ইলিশ অবতরণ হয়েছে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে কক্সবাজারে অন্যান্য মাছের সাথে ৩ শত মেট্টিন টনের বেশি ইলিশ এসেছে। তবে অবতরণ কেন্দ্র আধুনিকায়ন না হওয়ায় অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে মাছ বলে জানিয়েছেন জেলে, মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (০৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীতে দেখা যায় শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার নোঙ্গর করা। নোঙ্গর করা এসব ট্রলারের পাশে অবস্থান করছে অসংখ্য ছোট ছোট ডিঙি নৌকা। বড় ট্রলার থেকে ডিঙি নৌকায় নামানো হচ্ছে শত শত ইলিশ। এসব ইলিশ নিয়ে দ্রæত ঘাটে ভিড়ছে ডিঙি নৌকাগুলো। আর একের পর এক ইলিশ ঝুঁড়ি ভর্তি করে নামানো হচ্ছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে।
এফবি ছাইদা ট্রলারের জেলে শফিক বলেন, ‘সাগরে গিয়ে গেলো ৭ দিন জাল ফেলেছি। জাল ফেলতেই ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়েছে ইলিশ। প্রায় ৪ হাজার ইলিশ নিয়ে অবতরণ কেন্দ্রের বিক্রি করার জন্য এসেছি। এখন দ্রæত এসব ইলিশ বিক্রি করে পুনরায় ট্রলারে মালামাল নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যাব’।
এফবি আল্লাহ দান ট্রলারের জেলে ছৈয়দ আলম বলেন, ‘সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় আমরা খুবই খুশি। আবারো সাগরে যাচ্ছি ৭ দিনের জন্য। আশা করি, আরো বেশি ইলিশ ধরা পড়বে। কারণ সাগরে ভরপুর ইলিশ রয়েছে’।
আরেক জেলে ইব্রাহীম বলেন, ‘সাগরে ১০ দিন জালে ফেলে ৫ হাজার ইলিশ পেয়েছি। এখন এসব ইলিশ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে সাড়ে ৮টা লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। খরচ হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা, আর লাভ হয়েছে ৫ লাখ টাকা। আল্লাহ’র কাছে লাখো শোকরিয়া। সাগরে ইলিশ ধরা পড়লেই খুবই আনন্দ লাগে’।
ট্রলার মালিক হাশেম বলেন, “সাগরে মাছ শিকার করে যেসব ট্রলার উপকূলে ফিরছে, প্রতিটি ট্রলারে ভরপুর ইলিশ পেয়েছে। আমার ৩টি ট্রলারে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করেছি। এখন লোকসান অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পারব।”
অবতরণ কেন্দ্রের ৩টি পল্টুন ইলিশে সয়লাব। স্তুপ করে রাখার পরও স্থান না পেয়ে রাখা হচ্ছে খোলা মাঠে। তবে বেশি ইলিশ অবতরণ হওয়ায় দাম কিছুটা কমলেও স্বস্তিতে নেই মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি; খোলা মাঠে ইলিশ রাখায় অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে তাদের মাছ।
মৎস্য ব্যবসায়ী ছৈয়দ হোসেন বলেন, সরকারি বন্ধের কারণে সাগরে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে অবতরণ কেন্দ্রে বেশি ইলিশ অবতরণ হওয়ায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে।
কক্সবাজার অবতরণ কেন্দ্র মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতি লিমিটেড’র সভাপতি ওসমান গণি টুলু বলেন, সাগর মাছ শিকার শেষে প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৬০টি ট্রলার অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে আসছে। কিন্তু একটি জেটি হওয়ার কারণে মাছ নামাতে পারছে না। অনেকেই অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বড় ট্রলার থেকে ছোট নৌকায় মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে। আর অবতরণ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পল্টুন নেই। যার কারণে মাছ রাখার স্থান পাওয়া যায় না। অনেক সময় মাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই, অবতরণ কেন্দ্রটি যদি আধুনিক, কয়েকটি জেটি ও কয়েকটি পল্টুন বাড়ানো হয় তাহলে সবাই উপকৃত হবে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. বদরুদ্দৌজা বলেন, সরকারি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষের পর এক সপ্তাহে সাড়ে ৩’শ মেট্রিক টনের অধিক সামুদ্রিক মাছ অবতরণ কেন্দ্রে অবতরণ হয়েছে। তার মধ্যে শুধুমাত্র ইলিশ রয়েছে ৩ শত মেট্রিক টনের বেশি। গতবছর এসময়ে যে পরিমাণ মাছ অবতরণ হয়েছিল, তার চেয়ে দ্বিগুণ মাছ এবার অবতরণ কেন্দ্রে অবতরণ হয়েছে। এতে বুঝা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগরে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। যার সুফল এখন জেলে থেকে শুরু করে সবাই পাচ্ছে।
ব্যবস্থাপক মো. বদরুদ্দৌজা আরও বলেন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের জেটি এবং পল্টুন এরই মধ্যে সংস্কারের কাজ চলমান রয়েছে। তবে আগামী বছর থেকে জাইকা কাজ শুরু করছে। তারা মৎস্য অবতরণ আধুনিকায়নের পাশাপাশি ২টি জেটি ও অনেকগুলো শেড নির্মাণ করবে। ফলে সব সমস্যার সমাধান ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
ফয়সাল উদ্দিন রিপন : বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ৮মে…
বিশেষ প্রতিবেদক : ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ…
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে সংঘবদ্ধ মাটির পাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার…
টেকনাফ প্রতিবেদক : সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির চলমান…
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার পৌরসভাকে প্লাস্টিক বর্জ্য মুক্ত করতে উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সাথে যৌথভাবে কাজ…
বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও খুরুশকুল বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে…