বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজার জেলার ৬০ হাজার লবণ চাষীর ভাগ্যাকাশে যেন কালো মেঘের ছায়া নেমেছে। মৌসুম ভিত্তিক সাত মাসের উৎপাদন সময় বাকি রয়েছে মাত্র দুই মাস। এ সময়ে বিপুল পরিমাণ মাঠে মজুদ করা লবণ নিয়ে চাষীরা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। বর্তমানে উৎপাদনের শত টাকা কম মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে লবণ। অথচ দেশে ২৩ লাখ ৫৪ হাজার মেট্টিন টন লবণের চাহিদার বেশি লবণ উৎপাদনে আশাবাদি চাষীরা।

কক্সবাজারস্থ লবণ শিল্পের উন্নয়ন কার্যালয়, বিসিক এর তথ্য মতে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় শুধু মাত্রা লবণ উৎপাদন করা হয়। ৬০ হাজার একর চাষ যোগ্য জমিতে উৎপাদিত লবণ দেশের চাহিদার লক্ষ্য মাত্রা পূরণ করে থাকে। প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। ২০২১-২০২২ সালে দেশের লবণের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ লাখ ৫৪ হ্জাার মেট্টিন টন।

বিসিকের উপ মহা-ব্যবস্থাপক মো. জাফর ইকবাল ভূঁইয়া জানান, ২২ মার্চ পর্যন্ত ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৯২০ মেট্টিক টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। বর্তমানে মাঠে কম হলেও ২ লাখ ১৮ হাজারের বেশি লবণ মজুদ রয়েছে। লবণ উৎপাদন বিবেচনায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। তবে মূল্য কমানোর কারণ নিয়ে তিনি পরিষ্কার কোন ধারণা দিতে পারেননি।

তিনি জানান, লবণ মিল মালিক, ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে লবণের দাম উঠা-নামা হয়ে থাকে। এটা জন্য সরকার কাজ করছে। তিনি আশা করছেন, দাম আবারো বাড়বে।

লবণ চাষী সমিতির সভাপতি এসএম শহীদ উল্লাহ চৌধুরী জানান, মাঠে প্রতিমণ লবণ উৎপাদনের খরচ ৩১৭ টাকা হলেও হঠাৎ করে লবণের দাম ২০০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। এতে ১১৭ টাকা মণ প্রতি কম মূল্য পাওয়ায় চাষীরা লবণ বিক্রি করতে অনিহা প্রকাশ করছে। অথচ বর্তমানে মাঠে কয়েক লাখ মেট্টিন লবণ লবণ মজুদ রয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার টন লবণ নতুন করে উৎপাদন হচ্ছে। এতে চাষীরা খুব হতাশ রয়েছে।

তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি শেষ দিকে লবণের মূল্য ৪০০ টাকা ছিলো। হঠাৎ করে সিন্ডিকেট করে লবণ মিল মালিকরা লবণ ক্রয় বন্ধ করে দাম কমানো হয়েছে। মৌসুম ভিত্তিক হিসেব মতে নভেম্বরের মাঝা-মাঝি সময় থেতে মে মাসের মাঝা-মাঝি পর্যন্ত লবণ উৎপাদনের মৌসুম। এখন লবণ উৎপাদনের ভর মৌসুম ধরা হয়। ২ মাস সময় থাকতে সিন্ডিকেটের কবলে লবণ চাষীরা অনিশ্চিত জীবন যাপন করছেন।

লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক মকছুদ আহমদ জানান, গেল বছরের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন লবণ অবিক্রিত অবস্থায় মজুদ ছিলো। ৫ মাসে চাহিদার কাছা-কাছি লবণ উৎপাদন হয়েছে। এখন ন্যায্যা মুল্য না পেয়ে চাষীরা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন।

চৌফলদন্ডী এলাকার লবণ চাষী হাসানুল রশিদ জানান, লবণ উৎপাদন নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তিনি শেষ সময়ে দাম পতনের কবলে ব্যাপক ক্ষতির আশংকা সৃষ্টি হয়েছে।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

2 hours ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

2 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago