লোকমান হাকিম : সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে চার দিনের ভারী বর্ষণে মহেশখালীতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাহাড় ধসে দুইজনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হয়েছে আরও ১০ জন। প্রধান সড়কসহ গ্রামীণ অভ্যন্তরীণ ৪৫ কিলোমিটার রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখনো চার ইউনিয়নের ৮৮ গ্রামের ৪৫০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। অন্যদিকে পাহাড় ধসে কয়েক শ পানের বরজ নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হাজারো পান চাষী।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা বিতরণ শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেল থেকে মাতারবাড়ি, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী, বড় মহেশখালী, কুতুবজোম ইউনিয়নে এ সহায়তা বিতরণ করা হয়। শনিবার থেকে বাকী ইউনিয়নগুলোতে এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহফুজুর রহমান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত আট ইউনিয়ন ও এক পৌরসভার জন্য জরুরী ভিত্তিতে ৪৭ মেট্রিক টন চাল, ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে আমরা সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছি। পাহাড় ধসে নিহত দুইজনের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা প্রদান করেছি। এছাড়া বানভাসী পরিবারের মাঝে ২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’
এদিকে উপজেলা প্রশাসন সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মহেশখালীতে রাস্তার ক্ষতি হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার। এছাড়া পাহাড় ধস, ঢল ও জোয়ারের পানিতে ১ হাজার ২০০ বাড়ি ও ৮০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। অতি বৃষ্টিতে ৪ ইউনিয়নের ৮৮ গ্রাম প্লাবিত হয়ে ৪ হাজার ৫শ পরিবার এখনো পানিবন্দি রয়েছে।
মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক জানান , ‘বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়েছে তাদের ঢেউটিন বিতরণ করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত সংস্কারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি।’
দিশেহারা পান চাষীরা :
উপজেলার ইউনিয়নে পাহাড় ধস ও ঢলের পানিতে পানের বরজ নষ্ট হওয়ায় জীবিকা হারিয়ে চরম সংকটে হাজারো চাষী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ পান চাষীই এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে নতুন বরজ রোপন করেছিলেন। এতে চাষীরা কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, মহেশখালীতে ১৫ হাজার পান চাষী রয়েছে। এর সাথে জড়িত রয়েছে আরও লক্ষাধিক মানুষ।
সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হোয়ানক, কালারমারছড়া, বড় মহেশখালী ও শাপলাপুর।
হোয়ানক রাজুয়ার ঘোনার পান চাষী মো. দেলোয়ার (৩১) বলেন, ‘২৫ শতক জমিতে নতুন বরজ রোপন করেছিলাম। কিন্তু পাহাড় ধসে সেটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৪০ হাজার টাকার ক্ষতি হলো।কিস্তিতে ঋণ নিয়েছিলাম। এখন দুই মেয়ে এক ছেলের সংসার নিয়ে কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা।’
শামসুল আলম (৫৫) আরেক চাষী বলেন, ‘৫০ শতক জমিতে আড়াই লাখ টাকা খরচে নতুন পান বরজ রোপন করেছিলাম। পাহাড় চাপায় ৩৫ শতক জমির বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। মোটামুটি ১৫ শতক জমির বরজ ভালো আছে। ঋণের টাকায় বরজ করে নিঃস্ব হয়েছি। আমরা ক্ষতিপূরন চাই।’
পান চাষী রফিকুল আলম, তজু মিয়া, মো. ইউনুস বলেন, উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় এ ক্ষতি আমরা পুষিয়ে উঠতে পারবো না।
হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পাশাপাশি ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কৃষকদের বিনা সুদে ঋণ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…
নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…
নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…
ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…