জাতীয়

জলবায়ু প্রশ্নে দ্রুত কর্মপরিকল্পনা চান প্রধানমন্ত্রী

বিডিনিউজ : কার্বন নিঃসরণ কমাতে উন্নত দেশগুলোকে দ্রুত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার রাতে ‘লিডার্স সামিট অন ক্লাইমেট’ এ ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখার জন্য উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে দ্রুত ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও ঝুঁকি নিরসন ব্যবস্থায় মনোনিবেশ করা উচিত।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই দিনের এই জলবায়ু  সম্মেলনে ৪০টি দেশের নেতারা যোগ দেন। তারা সম্মেলনে জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্বনেতাদের কিছু পরামর্শও দেন।

জলবায়ু সঙ্কট সমাধানে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বিশ্বব্যাপী সঙ্কট কেবলমাত্র দৃঢ সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই মোকাবেলা করা যেতে পারে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি২০ (দ্য ভালনারেবল ২০) এর চেয়ার হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর স্বার্থ তুলে ধরাই বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য।”

বাংলাদেশে অভিযোজন সম্পর্কিত বৈশ্বিক কেন্দ্রের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত অভিযোজন প্রক্রিয়াগুলো তুল ধরা সম্ভব হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বছরে ১০ হাজার কোটি ডলারের তহবিল নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই অর্থ দুর্বল দেশগুলোর ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে তাদের অভিযোজন এবং ঝুঁকি নিরসনে সমভাবে বন্টন করা উচিত।”

তিনি বলেন, প্রধান অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতকে জলবায়ু অর্থায়নে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি উদ্ভাবনের জন্য এগিয়ে আসা উচিত। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময়ের বিধান রেখে সবুজ অর্থনীতি এবং কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব দেওয়া দরকার।”

সম্মেলন অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানোয় জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাবর্তনের প্রশংসা করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকলেও সম্পদের সীমাবদ্ধতা নিয়ে বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমন বিষয়ে বিশ্বে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে।”

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জলবায়ু বিষয়ক অভিযোজন এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রতি বছর বাংলাদেশ ৫০০ কোটি ডলার ব্যয় করে, যা জিডিপির প্রায় ২.৫ শতাংশ।

মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কম কার্বন নিঃসরণের মাধ্যমে উন্নয়নের পথে রয়েছে। আমাদের ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশন- এনডিসি এবং অভিযোজন লক্ষ্য বাড়াতে আমরা ঝুঁকি কমানোর প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান জ্বালানি, শিল্প ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি আরও কিছু খাত অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমাদের ২০২১ সালের মধ্যে একটি মানসম্পন্ন এনডিসি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”

nupa alam

Recent Posts

ঈদের মোনাজাতে রোহিঙ্গাদের কান্না; স্বদেশ ফেরতের আকুতি

বিশেষ প্রতিবেদক : ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ…

3 weeks ago

‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ বন কর্মকর্তাকে হত্যা : পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে সংঘবদ্ধ মাটির পাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার…

3 weeks ago

মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ : সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ, এপারে কম্পন

টেকনাফ প্রতিবেদক : সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির চলমান…

3 weeks ago

কক্সবাজার পৌরসভায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার পৌরসভাকে প্লাস্টিক বর্জ্য মুক্ত করতে উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সাথে যৌথভাবে কাজ…

3 weeks ago

কক্সবাজারে বিদ্যুৎ নিয়ে সু-খবর

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও খুরুশকুল বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে…

3 weeks ago

রামুতে ড্রাম্প ট্রাক উল্টে চালকের মৃত্যু

রামু প্রতিবেদক : রামুতে ড্রাম্প ট্রাক উল্টে চালকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ২ টার…

4 weeks ago