গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে কক্সবাজারে বিক্ষোভ : ইজরায়েলি পণ্যের সাইন বোর্ড থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে সোমবার দিনব্যাপী বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষাও হয়নি। বিক্ষোভ মিছিল থেকে কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোন কলাতলীতে ইজরায়েলি পণ্যর সাইন বোর্ড থাকা অন্তত ২০ টি প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালানো হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে কক্সবাজার সরকারি কলেজ, কক্সবাজার সিটি কলেজ, সহ বিভিন্ন শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ফিলিস্তিনে বর্বর হামলার প্রতিবাদে “ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা” কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল হয়েছে টেকনাফ, উখিয়া, রামু, চকরিয়া সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়ও।

কক্সবাজার শহরে আয়োজিত একটি মিছিল থেকে কলাতলী এলাকায় চালানো হয় ভাংচুর। ওই মিছিলটি কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে সেটি হলিডে মোড় হয়ে ঘুরে লাবণী হয়ে কলাতলী যায়। এসময় ভাঙচুর চালানো হয়।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল জানান, ইজরায়েলি পণ্য রাখার অজুহাতে কেএফসি, পিৎজা হাটের পাশাপাশি কাঁচা লংকা, পানসি রেস্টুরেন্ট এবং মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় কাঁচ লেগে কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছে। এছাড়া কলাতলীর মোড় থেকে পর্যটন জোনের যেখানে এমন সাইনবোর্ড ছিল তার সব কয়েকটি ভাংচুর চালানো হয়। যেখানে অন্তত ২০ টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের ফিলিস্তিনের প্রতি সবসময় সংহতি রয়েছে। আজকের বিক্ষোভ মিছিলেও আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। তবে কিছু উশৃংখল লোকজন দ্বারা এমন ঘটনা কক্সবাজারের পর্যটনের জন্য অশনি সংকেত। আমরা ইসরায়েলের পণ্য যত সম্ভব বর্জন করছি। তারা যদি সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলতে বলতো তাহলে সুন্দর একটা সমাধান হতো।

কক্সবাজার পিৎজা হাটের ইনচার্জ পারভেজ মিয়া বলেন, মূলত কেএফসির ওপর মানুষের ক্ষোভ বেশি। তারা হঠাৎ মিছিল থেকে ইট পাটকেল মারা শুরু করে কেএফসি লক্ষ্য করে। তবে কেএফসি ওপরের ফ্লোরে হওয়ার এগুলো এসে পড়ে পিৎজা হাটে। আমাদের বেশকিছু কাঁচ এবং যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা আপাতত রেস্টুরেন্ট বন্ধ রেখেছি।

কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ বলেন, রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ডে সেভেন আপের বিজ্ঞাপন ছিলো। এই অজুহাতে আমাদের রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়। আমরাও তো ফিলিস্তিনকে সাপোর্ট করি। আমাদের বললে আমরা সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলতাম। কেন রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হলো!

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মোঃ ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, পুলিশ মিছিলের আগে পিছে ছিল। মিছিলের দৈর্ঘ্য বেশ বেশি হওয়ায় মাঝখান থেকে কিছু অতি উৎসাহী মানুষ ইসরাইলে পণ্য রাখার অভিযোগে কয়েকটি রেস্টুরেন্টে পেপসির সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেছে। কিছু দিল ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে তবে মিছিলে উপস্থিত মুরুব্বিরা তাদেরকে তৎক্ষণাৎ নিয়ন্ত্রণ করে।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউ আবারও চালু

সরকারিভাবে ২ চিকিৎসক পদায়ন, আরও ২ চিকিৎসক বিনা বেতনে সেবা প্রদানে সম্মতি নুপা আলম :…

4 days ago

পেকুয়ায় আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেপ্তার : অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেকুয়ায় মনির উদ্দিন ওরফে মনু (৩৮) নামে আওয়ামীলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে…

4 days ago