টেকনাফের সেই ভোল মাছ প্রতি কেজি ১৭ শত টাকায় বিক্রি

টেকনাফ প্রতিবেদক : টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের নাফনদীর মোহনায় ধরা পড়া সেই ১৯৫ কেজি ওজনের ভোল মাছটি প্রতি কেজি ১০ শত টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সোমবার সকালে নয়টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার উপরের বাজারে মাছটি কেটে বিক্রি শুরু করা হয়। যা মাত্র দুই ঘন্টায় বিক্রি শেষ হয়েছে। অনেক ক্রেতা ইচ্ছা থাকার পরও মাছটি ক্রয় করতে পারেননি। আর মাছটি দেখারএবং ক্রয় করার জন্য উৎসুক জনতার ভিড় ছিল।

সকালে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভ্যান গাড়িতে করে মাছটি বাজারে আনা হয়। চারজন শ্রমিক মাছটি কেটে টুকরা টুকরা করা হয়। ক্রেতারা সাধ্যমত দুই, তিন, পাঁচ, দশ ও বিশ কেজি পর্যন্ত কিনে নিয়ে যায়। প্রতি কেজি বিক্রি করা হয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকায়। তবে আগেরদিন মাইকিং করা হয়েছিল মাছের দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা।

মাছ ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে ১০ কেজি মাছ কিনেছি। দাম একটু বেশি হলেও পরিবারে ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতেও মাছ পাঠাব। তবে গতকালকে মাইকিং করা হয়েছিল প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রয় করা হবে। এক শত টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মাছ না পেয়েও অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে গেছে। তবে বিক্রেতা ১ কেজি ও ২ কেজি ওজনের কাটা মাছ বিক্রি করেননি। মাইকিং করে দাম হাঁকানো হয়েছিল ১৬০০ টাকায় কিন্তু বিক্রি করা হয়েছে ১৭০০ টাকায়। বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভোক্তাদের জিম্মি করে এভাবে বিক্রি করা হয়েছে।

মাছ বিক্রেতা জাফর আলম বলেন, বিশাল বড় আকারের মাছটি কেটে বিক্রয় করতে গিয়ে তেমন লাভ হয়নি। পাকনা ও রক্ত চলে যাওয়ার ওজন কমপক্ষে ২৫ কেজি কম হয়েছে। ব্যবসার জন্য মাছটি কিনে কেটে বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। পরিবহনসহ নানা ধরনের খরচ বাদ দিয়ে সামান্য কিছু টাকা লাভ হতে পারে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ভোক্তা দের হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে তৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হতো। তবে বিশাল একটি মাছ কেটে বিক্রি করেছে সেটা শুনেছি। এই মাছ কেনার জন্য প্রচুর লোকজনের সমাগম হয়েছে।

রবিবার বেলা ১১টার দিকে শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীর গোলারচর এলাকায় এ মাছ ধরা পড়েছে। শাহপরীর দ্বীপ কোনারপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ কালু ফকিরের মালিকানাধীন টানা জালে ভোল মাছটি ধরা পড়েছিল।

শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রিপাড়া মৎস্যঘাটে এনে মাছটির দাম হাঁকানো হয়েছিল সাড়ে তিন লাখ টাকা। পরে টেকনাফ জালিয়াপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী জাফর আলম ২ লাখ ৬০ হাজার টাকায় মাছটি কিনে নেন। পরে তিনি মাছটি টেকনাফ কেটে বিক্রি করেছে।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শাহপরীর দ্বীপের এক জেলের টানা জালে একটি বিশাল ভোল মাছ ধরা পড়ার খবর শুনেছি। শীত মৌসুমে ৫ থেকে ১৫ কেজি ওজন পর্যন্ত ভোল মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়ে। এই মাছ সাধারণত ৪০০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাগরে মাছ ধরার ওপর বিভিন্ন ধরনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে পালন হওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। জেলেরাও ভালো দাম পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় ভাষায় এটিকে ভোল মাছ বলা হলেও এর বৈজ্ঞানিক নাম রেইয়ামেস বলেই (raiamas-bola)। বিরল প্রজাতির এ মাছটি সব সময় পাওয়া যায় না।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

51 mins ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

1 hour ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago