মামলা থেকে রক্ষা পেতে শাহপরীরদ্বীপের ‘ইয়াবা সম্রাট’ মান্নানের কোটি টাকার মিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের ‘ইয়াবা সম্রাট’ খ্যাত আবদুল মান্নান অবশেষে আটকে গেলেন র‌্যাবের অভিযানের মামলায়। কিন্তু সেই মামলা থেকে রক্ষা পেতে কোটি টাকা মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তিনি।

গত ২৫ ডিসেম্বর শাহপরীরদ্বীপে পরিচালিত এক অভিযানে দেড় লাখ ইয়াবা সহ আটক করা হয় দুই জনকে। অভিযানে র‌্যাবের উপস্থিত টির পেয়ে পালিয়ে যাওয়া দুই জনের একজন এই আবদুল মান্নান। এব্যাপারে ২৬ ডিসেম্বর টেকনাফ থানায় র‌্যাব ১৫ এর টেকনাফে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক প্রদীপ কুমার মন্ডল বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেছেন, অভিযানে সময় দেড় লাখ ইয়াবা সহ আটক করা হয় শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়ার আবুল হোছাইনের ছেলে মোহাম্মদ মোস্তাক ও মৃত গোল ছেবরের ছেলে মোহাম্মদ হোছাইনকে। এ সময় র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় দুই জন। আটকরা জিজ্ঞাসাবাদের এই দুই জনের নাম প্রকাশ করেন।

মামলায় এই দুইজনকেও পলাতক আসামি দেখানো হয়। এরা হলেন, দক্ষিণ পাড়ার মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে আবদুল মান্নান ও করিম উল্লাহর ছেলে রশিদ উল্লাহ।

শাহপরীরদ্বীপের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, এলাকায় আবদুল মান্নানকে সকলেই ‘ইয়াবা সম্রাট’ হিসেবে চেনেন। গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে টেকনাফ সীমান্তের বহুল আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি সহযোগি হিসেবে শাহপরীরদ্বীপ সীমান্তের মাদক নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন মান্নান। আওয়ামীলীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে রাতারাতি নির্বাচিত হয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যও। কিন্তু কখনও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার আস্তানায় অভিযান চালানোর সাহস করেনি। কিন্তু গত ২৫ ডিসেম্বর তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় দেড় লাখ ইয়াবা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক জানান, মান্নান তার প্রতিবেশি। এক সময়ের জেলে হলেও সাবেক বদির আশ্রয়ে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। গত ১৫ বছর ধরে প্রকাশ্যে জড়িয়ে যান মাদক চোরাচালন সহ নানা অপরাধে। তার নেতৃত্বে শাহপরীরদ্বীপে গড়ে উঠে একটি সিন্ডিকেটও।

মোহাম্মদ ইসলাম নামের সমাজ কমিটির এক নেতা জানান, র‌্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা সমুহ মান্নানের বলেই এলাকায় প্রচার হয়েছে। মান্নান মামলার আসামিও হয়েছে। ‍কিন্তু মামলা থেকে রক্ষা পেতে পুলিশের তদন্তকারি কর্মকর্তা সহ নানা মাধ্যমে তৎপরতা শুরু করেছে। মান্নান প্রকাশ্যে কোটি টাকা বিনিয়োগে মামলা থেকে নিজকে রক্ষার ঘোষণাও দিয়ে যাচ্ছে।

এব্যাপারে আবদুল মান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, মামলার আসামি হওয়ার পর কৌশলগত কারণে ফোনটি বন্ধ রাখেন তিনি।

মামলার তদন্তকারি টেকনাফ থানার এসআই অনুপ কুমার ধর জানান, মামলার তদন্ত দ্রুত চলছে। এখানে জড়িত কোন মাদক কারবারি রক্ষা পাওয়া সুযোগ নেই।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

4 hours ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

4 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago