এবার নাফনদীর দুই চর ঘিরে বিস্ফোরণের শব্দ : টেকনাফ স্থল বন্দর সহ আশে-পাশে এলাকায় আতংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের ওপারে ৩০ কিলোমিটার জুড়ে রাতভর মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মর্টারশেল, বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে সীমান্তে বসবাসকারীরা। এর মধ্যে রবিবার বিকালে নাফনদীতে দুই দেশের দুইটি চরকে ঘিরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে এসেছে। এতে নিকটবর্তী টেকনাফ স্থল বন্দরে থাকা শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম আতংক তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী ও হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেও আতংক তৈরি হয়েছে।

টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী ও হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার মাঝামাঝি অবস্থিত টেকনাফ স্থল বন্দর। নাফনদীর তীরে অবস্থিত বন্দরের ঠিক অনুমানিক ২৫-৩০ ফুট পূর্বে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত জালিয়াদিয়া নামের চর। জালিয়াদিয়া থেকে পূর্ব উত্তরের অনুমানিক ৫০ ফুট দূরে মিয়ানমার নিয়ন্ত্রিত লালদিয়া নামের চরটি।

রবিবার বিকাল সাড়ে ৪ টা থেকে ঘন্টার বেশি সময় জুড়ে এই চর দুইটি ঘিরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী এলাকার ইউপি সদস্য নজির আহমদ ও হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী ।

এই দুই জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দে ভেসে আসলে বন্দরে থাকা শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে। এতে আতংকে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে আতংকে ঘর-বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় এলাকায় বসবাসরত মানুষও।

দুই জনপ্রতিনিধি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরের এখন সংঘাত তীব্র হয়ে উঠেছে। এতে এই চর দুইটি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা গোষ্ঠি আরএসও সদস্যের মধ্যে এই সংঘাত চলছে বলে নানাভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। বিকাল সাড়ে ৫ টার পর থেকে শব্দ শোনা যাচ্ছে না।

টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সংঘাতের জেরে মিয়ানমারের লালদিয়া চরে সংঘাতের খবর পাওয়া গেছে। কারা বা কাদের সাথে সংঘাত বলা যাচ্ছে না। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সর্তক রয়েছে।

এর আগে গত ১৮ সেপ্টেমর লালদিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সংঘাতে গুলি এসে পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের কার্যালয়, একটি পন্যবাহি ট্রাক ও স্থানীয় এক ব্যক্তির বসত ঘরে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোন ধরণের সাড়া দেননি।

এর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে এসেছে রবিবার সকাল ১০ টা পর্যন্ত। বিস্ফোরণের শব্দের সাথে কেঁপে উঠে টেকনাফের হ্নীলা, পৌরসভা, টেকনাফ সদর ও সাবরাং ইউনিয়নের বসতবাড়িও।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউ আবারও চালু

সরকারিভাবে ২ চিকিৎসক পদায়ন, আরও ২ চিকিৎসক বিনা বেতনে সেবা প্রদানে সম্মতি নুপা আলম :…

4 days ago

পেকুয়ায় আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেপ্তার : অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেকুয়ায় মনির উদ্দিন ওরফে মনু (৩৮) নামে আওয়ামীলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে…

4 days ago