টেকনাফে শিক্ষককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার দশ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফ ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মো. শামসুল আলম হত্যার ১০ বছরেও শেষ হয়নি বিচার কার্যক্রম। ইতিমধ্যে সকল আসামী জমিনে মুক্তি পেয়ে মামলার বাদি নিহতের স্ত্রী দিলসাদ বেগমকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও মামলার বাদি।

তাই দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ করে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গনে মানববন্ধব ও পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

মানববন্ধন উত্তর সমাবেশে টেকনাফ কলেজের অধ্যাপক সন্তোষ কুমার শীল বলেন, একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ১০ বছরেও বিচার হয়নি। আসামিদের একজন মারা গেলেও অন্যরা জামিনে রয়েছে। তারা বাদিকে মামলা প্রত্যাহার এবং সাক্ষীদের আদালতে সাক্ষ্য প্রদানে বাঁধা দিচ্ছে। একজন সহকর্মী শিক্ষক হিসেবে রাষ্ট্রকে বিচার নিশ্চিত করার আবেদন জানাচ্ছি।

অধ্যাপক সিরাজুল হক সিরাজ বলেন, বাংলা বিভাগের এই সহকর্মী শিক্ষককে দিন দুপুরে কারা হামলা করেছিল এলাকার সকলেই জানান। অথচ এই মামলাটি বছরের পর বছর আটকে আছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করে আসামি প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুল আলম, অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন, অধ্যাপক আব্দুল গফুর, অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম প্রাক্তন শিক্ষার্থী গিয়াস উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম ও বতমান শিক্ষার্থী মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ শফিক প্রমুখ।

২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর বিকালে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল কলেজ শিক্ষক মো. শামসুল আলমকে। তিনি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম মহেশখালীয়াপাড়ার মৃত ফজল করিমের ছেলে।

আদালত থেকে প্রাপ্ত মামলার নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর শুক্রবার প্রকাশ্যে শামসুল আলমের ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে তাঁকে কক্সবাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁর অবস্থা অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। কিন্তু পথেই গাড়িতে থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর নিহতের স্ত্রী দিলসাদ বেগম বাদি হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পরের বছর পুলিশ ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। যেখানে ৩ জনকে। অভিযুক্ত আসামীর কেউ বর্তমানে কারাগারে নেই।

মামলার বাদি দিলসাদ জানান, জামিনে মুক্তি পাওয়া মো হাসান ইতিমধ্যে মারা গেছেন। এখন মামলা প্রত্যাহার করতে হুমকি ও সাক্ষিদের নানাভাবে হুমকি হয়রানী করা হচ্ছে।

nupa alam

Recent Posts

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

3 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

3 days ago

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিসিইউ আবারও চালু

সরকারিভাবে ২ চিকিৎসক পদায়ন, আরও ২ চিকিৎসক বিনা বেতনে সেবা প্রদানে সম্মতি নুপা আলম :…

4 days ago

পেকুয়ায় আওয়ামীলীগ নেতা গ্রেপ্তার : অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : পেকুয়ায় মনির উদ্দিন ওরফে মনু (৩৮) নামে আওয়ামীলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে…

4 days ago