কক্সবাজার জেলা

ট্রলার সহ ১৭ মাঝি-মাল্লা ২২ দিন ধরে নিখোঁজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ফিশিং ট্রলার সহ ১৭ মাঝি-মাল্লা গত ২২ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এব্যাপারে এফবি রামীম নামের ট্রলার মালিক খোরশেদ আলম কক্সবাজার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করেছেন।

ট্রলার মালিক খোরশেদ আলম, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের কাউয়ার পাড়া এলাকার রমজান আলীর ছেলে।

নিখোঁজ মাঝি-মাল্লারা হলেন, ট্রলার মাঝি মিজান, বেলাল, আমির আলী, নাহির, বেক্কা, মাদু, খোকন, এহেছান, আজিজ, আজিজুল হক, মো. মিয়া, রুবেল, ছৈয়দ, আব্দুল্লাহ, কাশেম, রিয়াজ উদ্দীন ও মো. আমিন। নিখোঁজ মাঝি-মাল্লা কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন।

গত ৩ অক্টোবর কক্সবাজার সদর থানায় করা সাধারণ ডায়েরীতে ট্রলার মালিক খোরশেদ আলম উল্লেখ করেছেন, এফবি রামীম নামের ট্রলারটি নিয়ে ১৭ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে গত ২০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১ টায় কক্সবাজার পৌরসভার টেকপাড়া মাঝির ঘাট এলাকাস্থ বাঁকখালী নদীর ঘাট থেকে গভীর সাগরে মাছ আহরণের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। নিয়ম মতে, ১০/১১ দিনের মধ্যে মধ্যে গভীর সাগর থেকে কক্সবাজারের উপকূলে ট্রলারটি ফিরে আসার কথা। ফিরে না আসায় ট্রলারে থাকা মাঝি-মাল্লাদের কয়েকটি ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু ফোনগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।

খোরশেদ আলম জানান, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাগরে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল। ওই সময় ঘাটে সকল ট্রলার নিয়ে মাঝি-মাল্লারা ফিরে আসেন। এরপর ট্রলারের থাকা জিপিআরএস ট্যাকিং শুরু করা হয়। ট্যাকিংও ট্রলারটি অবস্থান পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝি-মাল্লাদের অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ার নিখোঁজ পরিবারের পাশাপাশি তিনি নিজেও উৎকন্ঠায় আছেন।

কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, ট্রলারটি সহ মাঝি-মাল্লাদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য নানাভাবে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের জলসীমা অতিক্রম করে বিদেশের জলসীমায় চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের সকল বাহিনী বিশেষ করে নৌ-বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

কক্সবাজার শহরের পেশকারপাড়ায় বসবাসকারি নিখোঁজ মাঝি বেলালের স্ত্রী মারুফা জান্নাত জানান, এক ছেলে, এক মেয়ের সংসার। সাগরে যাওয়ার সময় ২০ সেপ্টেম্বর শেষ কথা হয়েছে স্বামীর সাথে। এখন নিখোঁজ থাকায় তিনি উৎকন্ঠায় আছেন।

নিখোঁজ থাকা ট্রলারের চালক আমির আলী লক্ষীপুরের কমলনগর এলাকার বাসিন্দা। তার ২ ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে সংসার। আমির আলীর ভাতিজা আহসান উল্লাহ জানান, এখন পুরো পরিবারের কাঁন্নার রোল চলছে। দ্রæত মাঝি-মাল্লাদের সন্ধানের দাবি তাঁর।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ হওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ট্রলারটির অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড সহ অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করে কোস্টগার্ডের পূর্ব জোনের এক কর্মকর্তা জানান, সাধারণ ডায়েরীর একটি কপি হাতে পেয়েছেন। ট্রলার ও মাঝি-মাল্লাদের উদ্ধারের নানাভাবে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

nupa alam

Recent Posts

ঈদের মোনাজাতে রোহিঙ্গাদের কান্না; স্বদেশ ফেরতের আকুতি

বিশেষ প্রতিবেদক : ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮ লাখ…

3 weeks ago

‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ বন কর্মকর্তাকে হত্যা : পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের উখিয়ায় পাহাড় কেটে সংঘবদ্ধ মাটির পাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার…

3 weeks ago

মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ : সীমান্তের ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ, এপারে কম্পন

টেকনাফ প্রতিবেদক : সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির চলমান…

3 weeks ago

কক্সবাজার পৌরসভায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার পৌরসভাকে প্লাস্টিক বর্জ্য মুক্ত করতে উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সাথে যৌথভাবে কাজ…

3 weeks ago

কক্সবাজারে বিদ্যুৎ নিয়ে সু-খবর

বিশেষ প্রতিবেদক : কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও খুরুশকুল বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে…

3 weeks ago

রামুতে ড্রাম্প ট্রাক উল্টে চালকের মৃত্যু

রামু প্রতিবেদক : রামুতে ড্রাম্প ট্রাক উল্টে চালকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ২ টার…

1 month ago