কক্সবাজারে বেশিরভাগ নারী লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মতো দেশে মেয়েদের শিক্ষার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় মেয়েদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার প্রয়োজন। কক্সবাজার জেলার স্থানীয় সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ নারী লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার। নিরাপত্তাহীনতা, সহিংসতা এবং চলাচলের অত্যন্ত সীমিত স্বাধীনতার মতো একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। নিরাপত্তা ইস্যু এবং সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা, যেমন বাবা-মা কিশোরী মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দেয়া, মেয়েদের স্কুলে খুব সীমিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে। মহিলাদের সাক্ষরতা এবং ভাষা দক্ষতা নিম্ন স্তরে থেকে যেতে সহায়তা করে।

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে বিপর্যস্ত অঞ্চলসমূহে মেয়েদের শিক্ষা প্রসারে সম্মিলিত উদ্যোগ বিষয়ক কর্মশালায় এসব কথা তথ্য ওঠে আসে। সরকারি-বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন অংশীদারসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারগণ কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) শহরের তারকামানের আবাসিক হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠানে আরো বলা হয়, বৈষম্য এবং লিঙ্গ বৈষম্য কক্সবাজার জেলায় মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাধা। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণে এটি প্রতীয়মান হয় যে, মেয়েদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কিশোরী মেয়েরা স্কুল ছেড়ে চলে যায়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পপির নির্বাহী পরিচালক মুর্শেদ আলম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির আলোচনা করেন, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ কে ফারুক আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া, জেলা শিক্ষা অফিসার মো. নাসির উদ্দিন এবং মালালা ফান্ড বাংলাদেশের ইন-কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মোশাররফ তানসেন।

বাংলাদেশে জলবায়ু-সহনশীল নারী শিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য মনোযোগ ও সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মত দেন বক্তাগণ।

তারা বলেন, পাঠ্যক্রমের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন শিক্ষাকে একীভূত, নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ উন্নতকরণ এবং সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির মাধ্যমে মেয়েদের শিক্ষা বিস্তারে জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলার উপযোগি করা দরকার।
কর্মশালায় বিভিন্ন সংস্থার তথ্যানুসন্ধানের সুত্র ধরে বাল্যবিবাহের একটি চিত্র উপস্থাপন করা হয়। তাতে দেখা গেছে, ঈদগাঁও উপজেলায় বাল্যবিবাহ বৃদ্ধির হার ৮২ শতাংশ)। পরের অবস্থানে উখিয়া উপজেলায় ৭৫ শতাংশ। এছাড়া রামু ৭২%, টেকনাফ ৬৬%, মহেশখালী ৬১%, কুতুবদিয়া ৫৪% এবং কক্সবাজার সদর ৫১%, চকরিয়ায় ৩২ শতাংশ ও পেকুয়ায় ২৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য স্থানীয়দের অপরাধমূলক ক্রিয়াকলাপে জড়িত করে। টেকনাফ ও উখিয়ায় কাজের সন্ধানে গিয়ে মানুষ পাচারের শিকার হয়। মিয়ানমার সীমান্তে মাদক পাচারের রুটগুলি নিরাপত্তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী আয়ের জন্য মাদক ব্যবসার আশ্রয় নিয়েছে, যা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মুখোমুখি চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

21 hours ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

21 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

4 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

4 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

5 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

5 days ago