আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বন বিনাশের অবসান ঘটিয়ে নতুন করে বন সৃজনের লক্ষ্য ঘোষণা করতে যাচ্ছেন গ্লাসগোতে সমবেত হওয়া শতাধিক রাষ্ট্রনেতা।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে জানিয়ে বিবিসি লিখেছে, এটাই হতে যাচ্ছে এবারের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬ এর প্রথম কোনো বড় সমঝোতা।
যেসব দেশ বন রক্ষার এই অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ব্রাজিলও রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশে আমাজন অরণ্যের একটি বড় অংশের গাছ কেটে এরইমধ্যে ন্যাড়া করে ফেলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ বনভূমি রয়েছে এসব দেশে। বন রক্ষার জন্য ১৯.২ বিলিয়ন ডলারের তহবিল যোগানোর প্রতিশ্রুতিও থাকছে এই চুক্তিতে।
বিবিসি লিখেছে, গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের এই ঐকমত্যকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ২০১৪ সালে করা এরকম আরেকটি চুক্তির পরও যে বন রক্ষায় তেমন কোনো সাফল্য আসেনি, সেটা মনে করিয়ে দিয়ে তারা বলেছেন, শুধু প্রতিশ্রুতি দিলে হবে না, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
ব্যাপক শিল্পায়নের শুরু থেকে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যত বেড়েছে, পৃথিবীর বায়মণ্ডলে বেড়েছে কার্বন গ্যাসের ঘনত্ব। আর এর প্রভাবে বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা, যা বদলে দিচ্ছে জলবায়ু, ডেকে আনছে বিপর্যয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের এই গতিকে আরও ত্বরান্বিত করছে বৃক্ষ নিধন, কারণ গাছ বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড টেনে নেয় বলে বাতাসে কার্বন গ্যাসের ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হয়। অর্থাৎ, বন ধ্বংস করে মানুষ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পথ আরও উন্মুক্ত করে দিচ্ছে।
বিবিসি লিখেছে, বর্তমানে প্রতি মিনিটে ২৭টি ফুটবল মাঠের সমান বনভূমি কাটা পড়ছে পৃথিবীর মানুষের হাতে। আর গাছ কাটার মাধ্যমেও বায়ুমণ্ডলে যোগ হচ্ছে বাড়তি কার্বন ডাই অক্সাইড।
উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরু অঞ্চলে গলছে বরফ, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের মত প্রকৃতিক দুর্যোগ আরও ঘন ঘন এবং আরও বেশি রুদ্ররোষ নিয়ে আঘাত হানছে, ডেকে আনছে ধ্বংস।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিপর্যয় এড়াতে হলে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির গতি কমিয়ে আনতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, যেন ২১০০ সাল পর্যন্ত সময়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ে।
২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তিতে রাষ্ট্রনেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ওই পর্যায়ে আটকে রাখতে যা করা দরকার, তা তারা করবেন। কিন্তু সেজন্য সম্মিলিতভাবে কার্বন গ্যাস নির্গমণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। আর এ কারণেই এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনকে অনেকে দেখছেন বিশ্বকে বাঁচানোর ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে।
বিবিসি লিখেছে, বনভূমি রক্ষার অঙ্গীকার জানিয়ে যে চুক্তি মঙ্গলবার হতে যাচ্ছে, ব্রাজিলের পাশাপাশি কানাডা, রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াও স্বাক্ষর করবে তাতে।
এ চুক্তির আওতায় যে তহবিল গঠন হবে, তার একটি অংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দেওয়া হবে ভূমিক্ষয় রোধ, দাবানল নিয়ন্ত্রণ এবং আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোর সহযোগিতার জন্য।
পাম তেল, সয়া এবং কোকোয়ার মত কৃষি পণ্য উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন দেশে যে বন ধ্বংস করা হয়েছে, তারও অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করতে যাচ্ছে এসব পণ্যের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় থাকা ২৮ দেশের সরকার।
আর ত্রিশটির বেশি বড় কোম্পানি প্রতিশ্রুতি দিতে যাচ্ছে, বৃক্ষ নিধন হয়, এমন কোনো কাজে বিনিয়োগ করা তারা বন্ধ করবে।
কঙ্গো অববাহিকায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ রেইন ফরেস্ট রক্ষায় ১.১ বিলিয়ন ডলারের আরেকটি তহবিল গড়ার ঘোষণা আসবে মঙ্গলবারের চুক্তির সঙ্গে।
কপ২৬ এর আয়োজক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ভাষায়, পৃথিবীর ‘ফুসফুস’ যে বনভূমি, তা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় এই চুক্তি হবে একটি মাইলফলক।
ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের জলবায়ু ও বন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সায়মন লুইস বিবিসিকে বলেছেন, “এতগুলো দেশ বন রক্ষার জন্য রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিতে এবং এই উদ্যোগ এগিয়ে নিতে তহবিল যোগাতে রাজি হয়েছে, এটা সুখবর। কিন্তু ২০১৪ সালে নিউ ইয়র্কেও এরকম প্রতিশ্রুতি বিশ্বনেতাদের তরফ থেকে এসেছিল, বনের বিনাশ ঠেকাতে তা ব্যর্থ হয়েছে।”
তিনি বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মত দেশে প্রতি বছর যে বিপুল পরিমাণ মাংস খাওয়া হয়, তার একটি বড় অংশের যোগান আসে দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনাঞ্চল থেকে। সেখানে আগুন দিয়ে বন পুড়িয়ে জমি খালি করা হয় গবাদিপশু চরানোর জন্য। সেই মাংসের চাহিদা কমিয়ে আনার কোনো চেষ্টা নতুন চুক্তিতে নেই।
বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…
নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…
নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…
ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…