কাজের সন্ধানে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা, রামুতে ৩দিনে আটক ২৫০

সোয়েব সাঈদ, রামু : চলমান কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে রামু উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী চেকপোষ্ট। সেই চেক পোষ্টে দায়িত্বরত চৌকিদারদের হাতে গত ৩ দিনে আটক হয়েছেন আড়াইশত রোহিঙ্গা। কাজের সন্ধ্যানে ক্যাস্প থেকে পালিয়ে এভাবে দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। এতে চরম ঝূকিতে পড়ছে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানিয়েছেন-সোমবার (২৬ জুলাই) জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের (চৌকিদার) চেকপোষ্ট ১৩৯ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়ে। এরা সবাই ইজিবাইক, রিক্সায় চড়ে এবং পায়ে হেটে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিলো। তিনি জানান-এরআগে গত রবিবার একই চেকপোষ্টে ৭৮ জন, শনিবার ৩০ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়ে।

ইউএনও প্রণয় চাকমা আরো জানান-আটকৃকদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা জরিমান আদায় করা হয়েছে। আটকের পর তাদের বাংলাদেশে লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (বøাষ্ট) এবং রামু থানা পুলিশের সহায়তায় উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি জানান-আটককৃত রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে কৌশলে পালিয়ে কাজের সন্ধানে কক্সবাজারের চকরিয়া, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, পটিয়াসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যাচ্ছিলো।

আটককৃত একাধিক রোহিঙ্গা জানান- তারা ক্যাম্পে পর্যাপ্ত খাবার আর নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাচ্ছেন না। তাই তারা নিরুপায় হয়ে অধিক টাকা রোজগারের আশায় ক্যাম্প ছেড়ে কাজে সন্ধানে বের হয়েছেন। যদিও তারা স্বীকার করেছেন- ‘ক্যাম্প ছেড়ে আসাটা অন্যায় হয়েছে’।

চেকপোষ্টে দায়িত্বরত জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্য নুরুল আমিন, নাজিম উদ্দিন (দফাদার), নুরুল হুদা, জিয়া উদ্দিন, হামিদ ও বজল আহমদ জানান-তারা উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত ২৩ জুলাই থেকে এখানে যানবাহন ও লোকজনের চলাচল রোধে কাজ করে আসছে। এসময় প্রতিদিন লোকজনকে জিজ্ঞাষাবাদ করতে গিয়ে রোহিঙ্গা শনাক্ত করতে থাকেন। প্রথমে কয়েকজন করে হলেও পরে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত তিন দিনে তারা আড়াই শত জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করে আটক করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন।

জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স জানিয়েছেন-রোহিঙ্গাদের মতো স্থানীয়রাও পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ি। কারণ কম মজুরিতে পাওয়ায় রোহিঙ্গাদের অনেকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গৃহস্থালী এবং কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সুযোগ দেন। তাই অনেক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকল সুবিধা পাওয়ার পরও লোভের বশবর্তী হয়ে কাজের আশায় দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িড়ে পড়ছে। তাই যারা রোহিঙ্গাদের কাজের সুযোগ বা আশ্রয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন রামু উপজেলা সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আলম জানিয়েছেন-রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা এমনিতেই নানা দূর্ভোগের শিকার হচ্ছি। এখন রোহিঙ্গারা এভাবে বানের পানির মতো দেশের যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকীর মুখে পড়বে।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

16 hours ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

16 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

4 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

4 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago