টেকনাফ দিয়ে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ ঘোষণা

বিশেষ প্রতিবেদক : দেশীয় খামারিদের লোকসানের কথা বিবেচনা করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এতে করে স্থানীয় পশু আমদানিকারকেরা বিপাকে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে এভাবে পশু আসছিল। প্রতিটি গরু- মহিষের বিপরীতে ৫০০টাকা রাজস্ব আদায় করে বৈধ করা হতো।

সোমবার রাতে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে পশু আমদানি করে আসছিল। ফলে এখন সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় খামারিদের কথা চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন, উপজেলায় ছোট-বড় আড়াই শতাধিক পশুর খামার রয়েছে। এরমধ্য অর্ধশতাধিক বড়। এসব খামারে ১৮ হাজার গরু- মহিষ -ছাগল রয়েছে। এই উপজেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা ৮ হাজারের মতো।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, রোববার বিকেলে জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির একটি জুম মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ এ আদেশ অমান্য করলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।

টেকনাফ কাস্টমস শুল্ক কর্মকর্তা মো. আব্দুন নুর বলেন, জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে মিয়ানমারের পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে ওই বৈঠকের আগে মিয়ানমার থেকে যেসব পশু এসেছে সেগুলোর ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি বছরের মে ও জুন মাসে মিয়ানমার থেকে ২৫ হাজার ৮৬৮টি গরু ও ৪ হাজার ২৫৮টি মহিষ এসেছে। এরআগে মার্চ-এপ্রিল মাসে ১১ হাজার ৮৮৬টি গরু ও ২ হাজার ৪২৪টি মহিষ এসেছিল।

টেকনাফে পশু ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সামনে কোরবানি ঈদ, এসময় হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হবে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র করিডর শাহপরীর দ্বীপ। এটি টেকনাফ কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের আওতাধীন । ২০০৩ সালে ২৫ মে মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে পশু আসা রোধ করতে এটি চালু করা হয়েছিল। বিজিবির সীমান্ত চৌকি-সংলগ্ন এলাকায় এ করিডর। মিয়ানমার থেকে আসা পশু প্রথমে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। পরে সোনালী ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে রাজস্ব জমা এবং কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের অনুমতি নিয়ে পশুগুলো করিডর থেকে ছাড়পত্র নেওয়া হয়।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

7 hours ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

7 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago