উখিয়ায় ৮৩২ পরিবারকে নগদ অর্থ বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা আইওএমের (IOM) অর্থায়নে বৈশ্বিক মহামারী করোনায় কর্মহীন ও দরিদ্র উখিয়ার ৮৩২ পরিবারকে দ্বিতীয় দফায় নগদ টাকা প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্থা ইউনাইটেড পারপাস।

এসময় পালংখালী ইউনিয়নের ২৬৭ পরিবার, জালিয়াপালং ইউনিয়নের ২০৯ পরিবার এবং রাজাপালং ইউনিয়নের নির্বাচিত ৩৫৬ পরিবারকে নগদ ৬০০০ টাকা করে দেয়া হয়।

এ সহায়তা কার্যক্রম উদ্ভোধন করে জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী বলেন, মহামারী করোনায় আজ জনজীবন বিপর্যস্ত। দিন দিন মানুষের অসহায়ত্ব বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে কর্মহীন হয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। করোনার শুরু থেকেই সরকারের প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা অসহায় মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসছে। এরই অংশ হিসেবে আইওএমের অর্থায়নে ইউনাইটেড পারপাস ইতিপূর্বেও এলাকার হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রাত্যহিক চাহিদা পুরনের জন্য নগদ টাকা প্রদান করেছিল। আজ আবারো তারা মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। এজন্য তিনি আইওএম ও ইউনাইটেড পারপাসকে ধন্যবাদ জানান এবং এ ধরনের কার্যক্রম  আরো বেশী বেশী করার অনুরোধ করেন।

আই ওএম প্রতিনিধি কুয়াশা রংদি বলেন,করোনা ভাইরাসের প্রকোপ মোকাবিলার জন্য ঘোষিত লকডাউনের কারণে সংকটে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষের পাশেই আছে আইওএম। এই নগদ টাকা দিয়ে অসহায় পরিবারগুলো তাৎক্ষণিক তাদের চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারবে। এ অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আইওএমের অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে।

২৮ বছর বয়সী পালংখালীর রোকেয়া বেগমের মতো অনেক পরিবারের জন্য করোনা মহামারী এক অবর্ণনীয় কষ্ট বয়ে এনেছে। প্রতিনিয়ত পরিবারের চাহিদা মেটাতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে এ নগদ টাকা তাকে আপ্লুত করেছে।

রাজাপালং এর হাতীমোরার প্রতিবন্ধী জাহিদ আলম। তিনি ৫ ও ২ বছরের দুই সন্তানের জনক।আগে সে বাঁশের ব্যবসা করে প্রতি মাসে উপার্জিত ৪০০০ টাকায় সংসার চালাতেন। কিন্তু করোনা মহামারীতে তার ব্যবসা পুরোটাই বন্ধ। জাহিদ আলম বলেন, যদিও আমার আয় খুব কম তবুও এই অল্প টাকায় আমাদের সংসার চলে যেত কোন রকমে। কিন্তু শেষ তিন মাসে কঠিন সময় পার করছিলাম।স্ত্রী-সন্তানদের দিনে দু বেলা খাবার জোগাড় করাও ছিল অনেক কঠিন। ইউনাইটেড পারপাসের এ ৬০০০ টাকা পেয়ে আমি জীবনের ঠাঁই খুঁজে পেয়েছি আমি  খুব খুশী। এখন কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।

ইউনাইটেড পারপাসের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুনীল জীবন চাকমা বলেন, দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকার ফলে অনেকেই খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে। প্রাত্যহিক চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর। এমন পরিস্থিতিতে আইওএমের অর্থায়নে আমরা উখিয়া-টেকনাফের দরিদ্র নির্বাচিত পরিবারগুলোকে প্রথমবারে (ঈদের আগে) নগদ ৩০০০টাকা এবং আজকে দ্বিতীয় দফায় ৬০০০ টাকা করে দিচ্ছি। যাতে তারা তাদের দৈনিন্দন চাহিদাগুলো মেটাতে পারে।

nupa alam

Recent Posts

সোনাদিয়া দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল

বাসস : পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) দেওয়া কক্সবাজারের মহেশখালীর…

1 hour ago

চকরিয়ায় অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক: চকরিয়ায় সুরাজপুর ইয়াংছা সড়কে যাত্রীবাহি সিএনজি চালিত অটোরিকশার সাথে ট্রাক গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে…

2 hours ago

টেকনাফে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের হ্নীলায় যৌতুকে দাবিতে মারধরে লুলুয়ান মরজান হিরা (১৭) নামে এক গৃহবধূর…

3 days ago

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘পরকিয়া প্রেমের’ জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত হয়েছেন। এ…

3 days ago

উখিয়া স্পেশালাইজড হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধ

ইউএনএইচসিআর-এর উদ্বেগ প্রকাশ নুপা আলম : অর্থ সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া স্পেশালাইজড…

4 days ago

কক্সবাজারে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোমবাতি হাতে জড়ো হয়েছিলো কয়েক…

4 days ago